বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন

স্বাধীনতার ৫১ বছরেও অবহেলিত ২৭ শহীদের গণকবর

স্বাধীনতার ৫১ বছরেও অবহেলিত ২৭ শহীদের গণকবর

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামে ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতায় শহীদ হন ২৭ জন সাধারণ মানুষ। তৎকালীন সময়ে শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও এই গণকবরটি সংরক্ষণের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

উপজেলা প্রশাসন কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউ খোঁজ নেয়নি এ গণকবরের। ফলে এটি পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত ভূমিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে বেঁধে রাখেন তাদের গবাদি পশু।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাবনা জেলার কাশিনাথপুরের দিকে যাওয়ার পথে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের চড়িয়া শিকার নামকস্থানে রাস্তায় ব্যারিকেডের মুখে যাত্রা বিরতি করে। এ সময় পাশেই কাশিনাথপুর নামে এক গ্রামের সন্ধান পান তারা। তখন হানাদার বাহিনী রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় চড়িয়া মধ্যপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে নির্মম গণহত্যা চালায়।

এ সময় চড়িয়া শিকারসহ আশপাশের ৩-৪টি গ্রামের প্রায় আড়াইশ মুক্তিপাগল মানুষকে আটক করা হয়। আটককৃতদের দুই লাইনে দাঁড় করিয়ে মেশিনগান দিয়ে গুলি করা হয়। এ গণহত্যায় পাটধারী গ্রামের ২৭ জন মানুষ শহীদ হন, আহত হন আরও শতাধিক। এ সকল শহীদদের অন্ধপুকুর পাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

পাক বাহিনীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আহত পাটধারী গ্রামের আন্না খন্দকার বলেন, সেদিন আমার পায়ে গুলি লেগে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে মৃত মনে করে ফেলে যায়। এখনো সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি।

হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন রশিদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে গণকবরটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। এসব শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক এবং পাঠাগার নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জল হোসেন বলেন, এই গণকবরটির বিষয়ে আমি জানতাম না, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমরা অবশ্যই গণকবরটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।

উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় ওই গণকবরে একাধিকবার গিয়েছি। সেখানে কয়েকবার দোয়া ও মিলাদের ব্যবস্থা করেছি। এখন বর্তমান এমপি (সংসদ সদস্য) চাইলে ইউএনও চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটা প্রকল্প বানিয়ে ওই গণকবর সংরক্ষণ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমরা সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করব।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |